৯/১১ হামলার ২১তম বার্ষিকী আজ রোববার (১১ই সেপ্টেম্বর)। ২০০১ সালের এই দিনে আমেরিকায় চারটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে, যে ঘটনায় নিহত হয় কয়েক হাজার মানুষ। এই হামলা ছিল শতাব্দীর অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ একটি হামলা। শুধু আমেরিকা নয়, গোটা বিশ্ব চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়।
৯/১১ নামে পরিচিতি পাওয়া ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ শামিল হয় পশ্চিমা দুনিয়া। ওই হামলার জন্য আল কায়েদাকে দায়ী করে দলটির নেতা ওসামা বিন লাদেনের ঘাঁটি আফগানিস্তানে হামলা চালায় ওয়াশিংটন। ক্ষমতাচ্যুত করা হয় লাদেনের মিত্র তৎকালীন তালেবান সরকারকে। তবে গত ২০ বছরে পরিবর্তন এসেছে সেই দৃশ্যপটেও। আবারো কাবুলের কুরসি নিয়েছে তালেবান।
যেভাবে হামলা
ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথ দিয়ে ওড়া চারটি বিমান একইসাথে ছিনতাই করে। তারপর বিমানগুলি তারা ব্যবহার করে নিউইয়র্ক আর ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে। দুটি বিমান বিধ্বস্ত করা হয় নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে। প্রথম বিমানটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে। দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয়।
দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে যায়। মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে দুটি ভবনই ভেঙে পড়ে যায়। তৃতীয় বিমানটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। এরপর, সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ বিমানটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে। ধারণা করা হয় ছিনতাইকারীরা চতুর্থ বিমানটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল। তবে যাত্রীদের বাধায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
এসব হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২,৯৭৭ জন। এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশিরভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৯/১১ হামলার ২১তম বার্ষিকীতে রবিবার ভাষণ দেবেন এবং পেন্টাগনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।
ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন রবিবার পেনসিলভানিয়ার শ্যাঙ্কসভিলে ফ্লাইট ৯৩ ন্যাশনাল মেমোরিয়াল ওবজারভেন্সে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী ডগলাস এমহফ যাবেন নিউইয়র্ক সিটিতে। সেখানে ৯/১১ হামলার জাতীয় স্মৃতিসৌধে একটি স্মরণ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন তিনি।
নিহতদের স্মরণে নিউ ইয়র্কের ৯/১১ মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজিয়ামে থাকবে বিভিন্ন আয়োজন। রীতি মেনে রোববার সকালে হামলার সময়ে বেল বাজানো হবে। নিহতদের স্বজনরা উচ্চ কণ্ঠে তাদের আত্মীয়দের নাম পড়ে শোনাবেন। টুইন টাওয়ার যেখানে একসময় দাঁড়িয়ে ছিল সেখান থেকে আবারও শ্রদ্ধা প্রকাশের বাতি জ্বলবে।